রাজনীতি করি না।



রাজনীতি করি না। 
কেন? 
বাংলাদেশের রাজনীতি কি রাজনীতি হলো। 
এখানে সবাই নোংরা রাজনীতি করে। 
যোগ্যতার এখানে কোনো দাম নেই। 
রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলে চাকুরী পাওয়া যায় না, 
ভালো টাকা পয়সা উপার্জন করা যায় না। 
কিংবা হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছও হওয়া যায় না। 
ইত্যাদি ইত্যাদি। 

একজন্য উচ্চ শিক্ষিত চার্টাড এ্যাকাউন্টের বক্তব্য ছিল,
কখনও ফ্রি কাজ করবে না। 
আবেগে হয়তো বলবে,
আমি ফ্রি কাজ করে দেব। 
কিন্ত কাজ যখন শুরু করবে তখন মনে হবে আমার বেতন কোথায়?
 আর বেতন না পেলেই তুমি তোমার কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলবে। 
তাই কাজের আগে বেতন ভাতা ঠিক করে নেবে। 

দ্বিতীয় পরামর্শ ছিল, 
তুমি যাকেই উপকার করবে কিংবা যেই তোমার উপকার করুক,
 নির্দিধায় ধরে নেবে এখানে কোনো স্বার্থ আছে। 
হয় এটা এখন প্রকাশ পাবে না হয় অনেক দিন পর।
 প্রশ্ন হচ্ছে, 
এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক কি? 
সম্পর্ক হচ্ছে জনদরদী। 
রাজনীতিবিদের একটি উপাধি থাকে জনদরদী। 
যা নি:স্বার্থতার সামিল। 
তারাই যে শুধু রাজনীতি করেন তা কিন্ত ভুল। 
কারণ তাদের রাজনীতির উৎস ধরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে কর্মসংস্থান হয়, 
তাদের হাত ধরে জীবিকার উৎসের সৃষ্টি হয়।
এটা স্বাভাবিক।
 আপনি একটি সুশীল পরিবারের একজন শিক্ষিত যুবতীতে প্রশ্ন করুন, 
আপনি কোন রাজনৈতিক দল পছন্দ করেন।

তিনি উত্তরটা নব্বই শতাংশের একজন হয়ে উত্তর দেবেন,
 আমি রাজনীতি পছন্দ করি না।
 উত্তর শেষ। 
এখন প্রয়োজন তার লেখাপড়া কিংবা সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য জেলার সবচেয়ে ভালো স্কুলটিকে ভর্তি করানো। 
প্রথম পছন্দই কিন্ত থাকে রাজনৈতিক ব্যক্তি। 
এলাকায় রাজনৈতিকভাবে কে শক্তিশালী কিংবা জনপ্রিয়। 
সরাসরি যোগাযোগ না থাকলে দুই তিন চার হাত ঘুরে সেই ব্যাক্তির 
সঙ্গে যোগাযোগ করতে ভুল করেন না সেই ব্যাক্তি। 
সে দেশের রাজনীতি পছন্দ করুক আর না করুক।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজম্মের মধ্যে “শিক্ষক” হওয়ার আগ্রহ কেউ দেখান না। 
কারণ বাবা যখন শিক্ষক হয়, তখন তার ইচ্ছা পূরণে বাবার সামর্থ তাকে আতকে দেয়। 
যে আতকে উঠে শিক্ষক হলেই বুঝি অনেক পছন্দকে অপছন্দ করতে হয়। 
অনেক প্রত্যাশাকে ভুল মনে হয়। 
কিন্ত তারই সম বয়সের বন্ধুর বাবা যখন সেই ইচ্ছাগুলো অনায়াসে পূরণ করে তখন সে শিক্ষক হওয়ার ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। 
আর রাজনীতি, পথের পাশে পড়ে থাকা রাজনৈতিক ব্যাক্তির লাশ, 
আর যখন তখন জেলখানা যেন পরিবারের অনিচ্ছার শর্ত।
 আনন্দের ঈদের দিনটিতে যখন প্রিয় মানুষটিকে রাজনৈতিক 
কারণে জেলখানায় থাকতে হয় তখন পরিবারের অন্য সদস্যরা 
উদিয়মান ভবিষ্যৎ কে এই পেশা থেকে দূরে রাখতে চায়।আর তার 
আশে পাশের প্রতিবেশিরাও যখন দেখে রাজনীতি করার কারণে
কয়েক দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে পুলিশের হাতকড়া 
পড়ে প্রিজন ভ্যানে উঠতে হয়, তখন ভবিষৎ প্রজম্ম দূর থেকে
 এ দৃশ্য দেখে রাজনীতি থেকে সরে আসে। এরকম আরও 
অনেক সমস্যা আছে আমাদের সমাজে। 

কোন সমাধান নাই , 
কারন আমরা রাজনীতি পছন্দ করি না। 
রাজনীতি মোটেও খারাপ পেশা না। 

শুধু আমাদের ভুলের কারণে রাজনীতি আগ্রহের একটি পেশাতে পরিণত হয়নি,
ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি গনমানুষের। 
কিন্ত একজন রাজনীতিবিদ এলাকা,
দেশ আর বিশ্বের যতটা পরিবর্তন বা যতটা সহায়ক তা কখনও কোনো বুদ্ধিজীবির পক্ষে করা সম্ভব নয়।

 রাজনীতির জন্য ভালবাসার জায়গাটি এখন খুলে দেয়া প্রয়োজন। 
স্বচ্ছতার জায়গাটিতে মানুষকে প্রবেশ করতে দেয়া প্রয়োজন।
 আমি আশাবাদী, নতুন প্রজম্ম রাজনীতিকে নিজের পেশা হিসাবে বেছে নেবে।
 আর তখনই স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে।